ময়মনসিংহশনিবার , ১৮ মে ২০১৯

গৌরীপুরে মাদক ব্যবসায়ীর ছুরিকাঘাতে ছাত্রলীগ নেতা খুন

মশিউর রহমান কাউসার
মে ১৮, ২০১৯ ২:৪৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী নূরু মিয়া (৪৫) ছুরিকাঘাত করে নুরুজ্জামান জনি (৩২) নামে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে খুন করেছে।

শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৮ টার সময় এ উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের নহাটা বাজারে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে। এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্দ জনতা ওইদিন রাত ১০টার দিকে হত্যাকান্ডে জড়িতদের বাড়ি-ঘর আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে।

নিহত জনি মাওহার কুমড়ী গ্রামের মৃত সিদ্দিকুর রহমান মাস্টারের একমাত্র ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নহাটা গ্রামের মৃত আজিম উদ্দিনের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী নূরু মিয়ার সাথে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রায় এক বছর ধরে জনির বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে গৌরীপুর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলাও রয়েছে। ঘটনারদিন ইফতার শেষে বাড়ি থেকে বের হয়ে নহাটা বাজারে রুকন মিয়ার চায়ের দোকানে বসে ছিল জনি। এসময় মাদক ব্যবসায়ী নূরু মিয়ার নেতৃত্বে ১৫/২০ জন সশস্ত্র লোক পরিকল্পিতভাবে জনিকে ডেকে নিয়ে সুজন মাহমুদের কম্পিউটারের দোকানের সামনে তার ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এসময় জনির বুকে ছুরিকাঘাত ও মুখে ক্ষুর দিয়ে আঘাত করে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করা হয়। প্রতিপক্ষের হাত থেকে বাঁচতে জনি দৌঁড়ে গিয়ে বাজার সংলগ্ন স্থানীয় খোকন মিয়ার পুকুর পাড়ে ওঠেন। সেখানে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জনিকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে জনির মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাত ১০ টার দিকে বিক্ষুব্দ শত শত জনতা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নূরু মিয়া, কাঞ্চন মিয়া, জিলু মিয়া, শিরু মিয়া, মোজাম্মেল, শামছু, হেলিম ও আব্দুল খালেকের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেন।

নিহতের মা ঝরনা খাতুন ও স্বজনরা জানান, জনি মাওহা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজ থেকে হিসাব বিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন। বর্তমানে তিনি একজন ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মী হিসেবে গৌরীপুর থানায় কর্মরত ছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি একটি প্রাইভেট কোম্মপানীতে চাকুরি করতেন।

তারা বলেন, ঘটনার দিন বিকেলে স্থানীয় বৈখেরহাটি বাজারে নূরু মিয়ার সাথে জনির বাকবিতন্ডা হয়। এরপর ইফতার শেষে বাড়ি থেকে কৌশলে মোবাইলে নহাটা বাজারে ডেকে নিয়ে জনিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে নূরু মিয়া গংরা।

গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, নিহত জনি ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মী হিসেবে গৌরীপুর থানায় কর্মরত ছিলেন। পূর্ব শত্রুতার জের হিসেবে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনাদিন রাতে বিক্ষুব্দ জনতা নূরু মিয়া ও তার সহযোগীদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হত্যাকান্ডে জড়িতদের আটক করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

    ইমেইলঃ news.gouripurnews@gmail.com