ময়মনসিংহরবিবার , ১২ জানুয়ারি ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

টাকার জন্য শিশু তোফাজ্জেল খুন, দাদা-চাচাসহ আটক ৯

জেলা প্রতিনিধি
জানুয়ারি ১২, ২০২০ ১:২৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় সাত বছরের শিশু তোফাজ্জেল হোসেনের মুক্তিপণের জন্য ৮০ হাজার টাকা দাবি করেছিল অপহরকারীরা। মুক্তিপণের টাকা না পাওয়ায় তোফাজ্জলকে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাতে তাহিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গিয়েছেন। আমাদের তদন্ত শেষ হলে খুনের কারণ জানাতে পারবো।

এদিকে শিশু তোফাজ্জেল হত্যার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৯ জনকে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। তারা হলেন- তাহিরপুর উপজেলার বাশতশা গ্রামের তোফাজ্জলের দাদা জয়নাল, চাচা ইকবাল হোসেন, ফুফু শেফালী বেগম, অপর ফুফু শিউলী বেগম, প্রতিবেশী হবি রহমান, তার স্ত্রী খইরুন নেছা ও তাদের ছেলে রাসেল। এছাড়াও শনিবার সকালেই একই গ্রামের কালা মিয়া ও তার ছেলে সেজাউল কবিরকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৮ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম বাশতলা দাদা জয়নাল মিয়ার বাড়ির সামনে থেকে নিখোঁজ হয় তোফাজ্জেল। আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা খোঁজ করলেও শিশুটিকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় তোফাজ্জেলের দাদা জয়নাল ৯ জানুয়ারি থানায় জিডি করেন। তাছাড়া ৯ জানুয়ারি রাতে কে বা কারা শিশু তোফাজ্জেলের এক জোড়া জুতাসহ ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণের একটি চিরকুট বাড়ির বারান্দায় রেখে যায় বলে জানান তোফাজ্জেলের বাবা জুবায়ের হোসেন।

তোফাজ্জেলের মা রিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ১ বছর আগে আগে তার ননদ শিউলি বেগমকে বিয়ে দেন একই গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে সেজাউল কবির। বিয়ের ১ মাস পর শিউলি বেগমকে নির্যাতন শুরু করে পরিবার। এনিয়ে তোফাজ্জেলের পরিবারের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো সেজাউল ও তার পরিবারের। তাছাড়া সেজাউলরে বিরুদ্ধে মামলাও চলমান রয়েছে আদালতে। তারা আমার ছেলেক হত্যা করেছে।

তোফাজ্জেলের বাবা জুবায়ের হোসেন বলেন, সেজাউল কবির ও কালা মিয়া আমার ছেলেকে অপহরণ করে খুন করেছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে তাহিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি যেহেতু খুবই সেনসেটিভ তাই আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৯ জনকে থানায় নিয়ে এসেছি। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আশা করি দ্রুত খুনের কারণ জানা যাবে।

উল্লেখ্য, নিখোঁজের তিনদিন পর শনিবার ভোরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে বস্তাবন্দি অবস্থায় তোফাজ্জল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ভোর সোয়া ৫টার দিকে উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের বাঁশতলা গ্রামে থাকা এক প্রতিবেশীর বাড়ির পেছন থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় তার একটি চোখ উপড়ানো ও একটি পা ভাঙা ছিল।

নিহত তোফাজ্জল উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের সীমান্তগ্রাম বাঁশতলা দারুল হেদায়েত মাদরাসার প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

    ইমেইলঃ news.gouripurnews@gmail.com