ময়মনসিংহরবিবার , ২৮ অক্টোবর ২০১৮

দুর্দিনেও নিজ পেশায় আঁকড়ে আছেন আলপনা শিল্পী বাহাদুর

গৌরীপুর নিউজ
অক্টোবর ২৮, ২০১৮ ৬:২৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মশিউর রহমান কাউসার ও আনোয়ার হোসেন শাহীন :
আবহমান বাংলার দৃশ্যমান নান্দনিকতা ফুটে ওঠে আলপনার মাধ্যমে। আলপনা শিল্পীরা (আর্টিস) তাদের মনস্তাত্ত্বিক বোধ দিয়ে ও মনের মাধুরী মিশিয়ে রং তুলির আঁচড়ে সৃষ্টি করেন তাদের নান্দনিক চিত্র। বর্তমান ডিজিটাল যুগে এ শিল্পীদের কদর কমলেও, শত কষ্টের মাঝেও প্রায় ৪৫ বছর ধরে এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন আলপনা শিল্পী আফজাল হোসেন বাহাদুর। ৭০ বছর বয়সী এ শিল্পীর বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের কলাবাগান এলাকায়। বাহাদুর নামে তিনি স্থানীয় সকলের কাছে পরিচিত। স্বাধীনতা সংগ্রামের পর পরই তিনি এটিকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। স্থানীয় প্রয়াত শিল্পী আতাউর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ‘রংমহল’ নামে আর্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে পেশাদার শিল্পী হিসেবে তিনি যাত্রা শুরু করেন। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠান-কর্মসূচীর কাপড়ের ব্যানার, প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড, কুঞ্জঘর, ককসীড ও কাগজে পারিবারিক নানা অনুষ্ঠানের আলপনা, পহেলা বৈশাখ ও নববর্ষে আলপনা, আলোকসজ্জাসহ নানা কাজ নিখুঁত ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করায় অল্পদিনেই তিনি এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। এরপর ১৯৭৩ সালে রাজধানীর নবাবপুর এলাকায় দি সবুর হোমিও রিচার্জ ল্যাবরেটরীতে সাইনবোর্ড লেখার চাকুরিতে যোগদান করেন। সেখানে দু’বছর কাজ করার পর চাকুরি ছেড়ে পুনরায় নিজ এলাকায় এসে এ কাজ শুরু করেন।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে এ প্রতিবেদকের সাথে কথাগুলো হয় আর্ট শিল্পী বাহাদুরের। এসময় তিনি আরো বলেন, অতীতে এ পেশায় আয় রোজগার বেশ ভালই ছিল। বর্তমান ডিজিটাল যুগে আর্ট করা সাইনবোর্ড ও কাগড়ের ব্যানার তৈরী করতে লোকজন খুব কম আসে। এছাড়া আলপনার কাজও অনেক কমে গেছে। এজন্য অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। ফলে এই শিল্পটি বিলুপ্তির পথে। তিনি এখনো আছেন এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে। স্থানীয় প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষ সুসজ্জিতকরন কাজ ও একটি স্কুলে শিশু শিক্ষার্থীদের আর্টের শিক্ষকতার আয় দিয়ে কোনমতে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন তিনি।
বাহাদুর জানান ছোটবেলা থেকেই তাঁর আর্টের প্রতি জোক ছিল। লেখাপড়ার পাশাপাশি ফুল, পাখির ছবি আঁকতেন। এ আঁকা আঁকি করতে গিয়ে একসময় আর্টের জগতে প্রবেশ করেন। নানা কারনে বেশিদূর পর্যন্ত লেখাপড়া করা হয়ে উঠেনি তার। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে তিনি গৌরীপুর কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। সে সময় আর্ট করার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন। ফুটবল ও হা-ডু-ডু ছিল তার প্রিয় খেলা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি মার্কাজ বাজাতেন।

    ইমেইলঃ news.gouripurnews@gmail.com