ময়মনসিংহবৃহস্পতিবার , ২৫ জুলাই ২০১৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নেত্রকোনায় ‘গলাকাটা’ নাটক সাজিয়ে খালা-খালুকেও ফাঁসাল তানিম

জেলা প্রতিনিধি
জুলাই ২৫, ২০১৯ ১২:৫৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

‘গলাকাটা’ আতঙ্ক এখন ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। এই আতঙ্কে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে আসা-যাওয়া কমে গেছে। এরই মধ্যে ব্লেড দিয়ে হাতের তালু কেটে ‘গলা কেটে’ নেয়ার নাটক সাজাতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় তানিম নামের এক কিশোর।

ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে নেত্রকোনা কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের পেরিরচর গ্রামে। তানিম সান্দিকোনা বাজারের সানরাইজ কিন্ডারগার্টেনের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।

তার বাবার বাড়ি নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার গাজীপুর গ্রামে। তার বাবার নাম গোলাপ মিয়া। তিন বছর আগে সান্দিকোনার পেরিরচর গ্রামে খালার বাড়ি থেকে লেখাপড়া করার জন্য আসে তানিম। খালার নাম সেলিনা আক্তার এবং খালুর নাম নাজিম উদ্দিন।

কেন্দুয়া থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন, সোমবার রাত ১১টার দিকে বিভিন্ন জনের মোবাইল থেকে কল আসে। ফোনে বলা হয় সান্দিকোনা ইউনিয়নের পেরিরচর গ্রামে একটি ছেলকে অজ্ঞান করে উঠিয়ে নিয়ে বাড়ির পাশে নির্জন রাস্তায় গলা কাটার উদ্দেশ্যে আঘাত করে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। তাকে গুরুতর অবস্থায় স্বজনরা কেন্দুয়া উপজেলা আদমপুর হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

এ খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যায় পুলিশ। হাসপাতালে গিয়ে তানিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে একেক সময় একেক রকম তথ্য দেয়। বিষয়টি নেত্রকোনার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়াকে জানানো হয়।

মঙ্গলবার সকালে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেন্দুয়া থানা পুলিশের ওসিকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে ও ঘটনাস্থলে যান। হাসপাতালে গিয়ে তানিমের বক্তব্যে সন্দেহ হলে পেরিরচর গ্রামে গিয়েও ঘটনাস্থলের আশেপাশে ও বাড়ির লোকজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

পরে তানিমের খালার বাড়িতে গিয়ে তার পড়ার টেবিলের ওপর থেকে একটি রক্তমাখা সার্ফ ব্লেড উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশের সন্দেহ হলে তানিমকে নিয়ে থানায় আসে। থানায় আনার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে পুলিশকে জানায়, তার খালা এবং খালুর পরামর্শে ‘গলাকাটা’ গুজব রটাতে এরকম নাটক সাজায়। এ ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

সান্দিকোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘গলাকাটার’ নাটক সাজাতে এরকম একটি বানোয়াট ঘটনা প্রচার করা হচ্ছে। কেন তারা এমনটি করেছে এ বিষয়ে তিনি বলেন, পুলিশের তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।

নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে তানিমকে দিয়ে ‘গলাকাটার’ গুজব ছড়াতেই এরকম একটি ঘটনা সাজানো হয়েছিল। এ বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে। ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বুধবার দুপুরে নেত্রকোনা জেলা পুলিশের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বলেন, এ ঘটনার পেছনে কারও মদদ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি কেউ থেকে থাকে তবে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

    ইমেইলঃ news.gouripurnews@gmail.com