রোজায় দ্রব্যমূল্য নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খুচরা বিক্রেতারাও বলছেন, সরকার উদ্যোগী হয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ না করলে বেশি দামে বিক্রি করা ছাড়া তাদের ‘উপায় থাকবে না’।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি ও খুচরা দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজ-রসুনের দাম কেজিতে ৩ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে অন্তত ২ টাকা।
পেঁয়াজের এ সপ্তাহের মূল্য নিয়ে মসলা বিক্রেতা মোহাম্মদ এরশাদ বলেন, “পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা। খুচরায়ও পড়েছে এর প্রভাব। খুচরায় প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা থেকে ৩০ টাকায়।”
পেঁয়াজের মতোই রসুনের বাজার চলতি সপ্তাহে ঊর্ধমুখী হয়েছে। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে পাইকারিতে আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়, দেশি রসুন ৫ টাকা বেড়ে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আদার দাম। এক মাসের ব্যবধানে আদার দাম ৩০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি এখন ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারে কেনাকাটা করতে আসা শরাফত উদ্দিন বলেন, “রোজা আসছে। এখন সিন্ডিকেট করে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর ফন্দি আঁটবে অনেক ব্যবসায়ী।
“এখনই দুয়েকটি পণ্যের দাম বাড়া শুরু হয়েছে। সরকার কঠোর ও সতর্ক নজরদারি না করলে এটা ঠেকানো যাবে না “
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৭ মে রোজা শুরু হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ। আসন্ন রোজায় বাজারে দাম না বাড়াতে ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত সপ্তাহের মতো গরুর মাংসও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে, ৫৫০ টাকার নিচে কেজি মিলছে না।
বিক্রেতাদের অনেকে বলেছেন, গরুর দাম বেড়ে যাওয়ায় মাংসের দাম বাড়াতে হয়েছে।
তবে কামরুজ্জামান নামে কারওয়ানবাজারের একজন বিক্রেতা বললেন, ক্রেতার চাহিদা কম থাকায় ৫২০ টাকায় গরুর মাংসের কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।
বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস কেনা যাচ্ছে সাড়ে ৭০০ টাকায়।
আর ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে ১৪০ টাকায় নেমেছে। কমেছে ডিমের দামও। ডিম এখন প্রতি ডজন ৯০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ৯৫ টাকা ছিল।
গত সপ্তাহে মাছের বাজার চড়া হলেও চলতি সপ্তাহে তা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন বিক্রেতা।
এদিন মাগুর মাছ ৬৫০ টাকা, ছোট আকারের রিটা মাছ ৫৫০ টাকা, পলি মাছ ৪০০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, গজার মাছ ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা, চিতল মাছ ৭০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ টাকা, রুই মাছ ২২০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা, কাতল ৩৮০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা, ইলিশ ৮০০ টাকা করে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান মাছের আড়তদার শফিকুল ইসলাম।
পাইকারি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ সপ্তাহে স্থিতিশীল রয়েছে আটা, ময়দা ও তেল চিনির দাম।
এক বস্তা (৫০ কেজি) ময়দা ১২০০ টাকা থেকে ১৩৮০ টাকা, আটা ১১০০ টাকায় পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে।
আমির অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে একটি পাইকারি দোকানের বিক্রেতারা জানান, বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়তে থাকায় কমে এসেছে সয়াবিন তেলের দাম।
৫ লিটার ওজনের একটি সয়াবিনের বোতল এখন ৪২০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। আর রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের তেল বিক্রি হচ্ছে ৪৭০ টাকায়।
গত সপ্তাহের বাজারেও সয়াবিন তেলের দাম স্থিতিশীল পাওয়া যায়।
রোজায় সবচেয়ে চাহিদা থাকে ছোলার।
বাজারে মাঝারি মানের ছোলা এখন প্রতি কেজি ৭৫ টাকা থেকে ৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান বিক্রমপুর স্টোরের শাহ আলম।
এছাড়া খেসারি ডাল ৬৫ টাকা থেকে ৭০ টাকা, বুটের ডাল ৯৫ টাকা, মুগডাল ৯০ টাকা থেকে একশ টাকা, মসুর ডাল ৬০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, মাস কলাই ৮০ টাকা দরে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা শামসুল আলম বলেন, কচুর লতি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, কচু ৪০ টাকা, লাউ ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা দরে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।
প্রিয় পাঠক আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর,খবরের পিছনের খবর সরাসরি জানাতে যোগাযোগ করুন। আপনার তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
মোবাইলঃ +8801717-785548, +8801518-463033
ইমেইলঃ news.gouripurnews@gmail.com