নেত্রকোনায় বোমা হামলা ট্র্যাজেডি দিবস আজ (৮ ডিসেম্বর)। দিবসটি উপলক্ষে রোববার সকাল ১০.৪০ থেকে ১০.৪৫ পর্যন্ত ৫ মিনিট শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ‘স্তব্ধ নেত্রকোনা কর্মসূচি’ পালন করে জেলার সর্বস্তরের জনগণ। এ সময় শহরের সমস্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যে যেখানে থাকেন সেখানেই দাঁড়িয়ে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এই কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হাবীবা রহমান খান শেফালী। নারী নেত্রী বেগম রোকেয়া, উদীচীর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহামান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুর রহমান (ভিপি লিটন), উদীচীর সম্পাদক অসীম ঘোষসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এছাড়া দিবসটি উপরক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে উদযাপন কমিটি। এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল উদীচী কার্যালয়ের সামনে কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ, উদীচী কার্যালয়ের সামনে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, প্রতিবাদী মিছিল, শহীদদের কবর জিয়ারত ও শহীদ পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাৎ। অন্যদিকে বিকেল সাড়ে ৫টায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সন্ত্রাস, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সমাবেশ ও প্রতিবাদী গণ সঙ্গীত পরিবেশিত হবে।
২০০৫ সালের ৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জেলা শহরের অজহর রোড়ে উদীচী কার্যালয়ের সামনে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় জেএমবি। বোমা হামলায় আত্মঘাতী কিশোরসহ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খাজা হায়দার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদীপ্তা পাল শেলী, মোটর মেকানিক্স যাদব দাসসহ ৮ জন নিহত এবং কমপক্ষে ৫০ জন আহত হন।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে জেএমবি প্রধান শায়খ আব্দুর রহমান, সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাই, শামরিক শাখার প্রধান আতাউর রহমান সানি, জেএমবি কমান্ডার আসাদুজ্জামান, সালাহ্উদ্দিন এবং ইউনূসসহ ৮ জনকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করে। ইতিমধ্যে ঢাকা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালত-২ নেত্রকোনায় বোমা হামলা মামলার ৭ আসামিকে ফাঁসি ও বাংলা ভাইয়ের স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছেন।
বোমা হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ ও নতুন প্রজন্মের সামনে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দুর্বার প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে নেত্রকোনার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো সম্মিলিতভাবে প্রতি বছরের ৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনা ট্র্যাজিডি দিবস পালন করে আসছে।
ইমেইলঃ news.gouripurnews@gmail.com