ময়মনসিংহশনিবার , ৭ ডিসেম্বর ২০১৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রুম্পার কবরের পাশে বসে কাঁদছেন মা

জেলা প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ৭, ২০১৯ ১১:০৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার মরদেহ গত বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।

‘রুম্পা হত্যার শিকার’ এমন সন্দেহে তদন্তে নামলেও এখন পর্যন্ত কিছুই নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। তবে রুম্পা হত্যার শিকার বলে দাবি করেছে তার পরিবার। সেই সঙ্গে রুম্পা আত্মহত্যা করতে পারে না বলেও দাবি তাদের।

এদিকে, রুম্পার মৃত্যুর পর থেকে মা নাহিদা আক্তার পারুলের কান্না থামছেই না। খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। পানি পর্যন্ত খাচ্ছেন না মা নাহিদা আক্তার।

ঘুমের ওষুধ দিয়েও তাকে ঘুম পাড়াতে পারছেন না স্বজনরা। নাহিদা কাঁদতে কাঁদতে অস্পষ্ট স্বরে বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতেই পারে না। আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।

রুম্পার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের সদর উপজেলার বিজয়নগরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে শোকের মাতম। কিছুতেই কান্না থামছে না রুম্পার মায়ের।

এরই মধ্যে শুক্রবার সকালে গ্রামের বাড়িতে রুম্পাকে দাফন করা হয়। শনিবার মেয়ের কবরের পাশে বসে অঝোরে কাঁদছেন রুম্পার মা। মেয়ের শোকে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন মা নাহিদা আক্তার। স্বজনরা তাকে সান্ত্বনা দিয়েও কান্না থামাতে পারছেন না। তিনদিন ধরে কিছুই খাননি তিনি। শারীরিকভাবে অসুস্থও হয়ে পড়েছেন মা নাহিদা আক্তার।

নাহিদা আক্তার বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতেই পারে না। আমি আমার মেয়েকে ভালো করেই চিনতাম। সে আত্মহত্যাকে ঘৃণা করত। সব সময় হাসিখুশি থাকতে পছন্দ করত।

বাবা রুককুন উদ্দিন বলেন, যদি রুম্পা আত্মহত্যা করত তাহলে নিজের বাসায় থেকেই করত। বাড়ি থেকে দূরে গিয়ে করত না। শুনেছি যে বাড়ির ছাদের নিচে তার লাশ পাওয়া গেছে, সেই বাড়িতে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র থাকে। তারা এখন নাকি পলাতক।

রুম্পার বাবা মো. রুককুন উদ্দিন হবিগঞ্জ জেলার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত। মা নাহিদা আক্তার পারুল গৃহিণী। এক ভাই ও এক বোনের রুম্পা সবার বড়।

২০১৪ সালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস্ স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি এবং ২০১৬ সালে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জিপিএ-৫ এইচএসসি উত্তীর্ণ হন রুম্পা।

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন রুম্পা। আর ছোট ভাই আশরাফুল আলম রাজধানীর ঢাকার ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ে।

ঢাকার শান্তিবাগে একটি ফ্ল্যাটে মায়ের সঙ্গে থেকে পড়াশোনা করতেন রুম্পা ও তার ছোট ভাই। পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করাতেন রুম্পা। গত বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ১১টার দিকে সিদ্ধেশ্বরীর সার্কুলার রোডের ৬৪/৪ নম্বর বাসার নিচে রুম্পার মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। ঘটনার পরপরই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হত্যার আলামত সংগ্রহ করে। সুরতহালে পুলিশ গুরুতর আলামহ পায়। সংগৃহীত আলামত ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়।

    ইমেইলঃ news.gouripurnews@gmail.com