ময়মনসিংহসোমবার , ২ জানুয়ারি ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পাঁচ মাস বয়সী শিশুকে আছড়ে হত্যা, পাষণ্ড পিতা ১২ বছর পর র‍্যাবের জালে ধরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
জানুয়ারি ২, ২০২৩ ১১:০৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

১২ বছর আগে জামালপুরের বকশীগঞ্জে নিজের পাঁচ মাসের সন্তানকে ঢেঁকির সঙ্গে আছাড় মেরে হত্যার পর আত্মগোপনে থাকা পিতাকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৪। ওই পিতার নাম মো. মোস্তফা। তিনি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার দুধনই গজারীকুড়া গ্রামের আ. রহিমের ছেলে।

রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকার খিলগাঁওয়ের নন্দিপাড়া ঘজীবাড়ি এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার সকালে জামালপুর র‌্যাব কার্যালয়ের কোম্পানি কমান্ডার আশিক উজ্জামান এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, ২০০৭ সালে গার্মেন্টসে চাকরির করার সুবাদে মো. মোস্তফার সঙ্গে বকশীগঞ্জ উপজেলার টুপকারচর গ্রামের মো. উজির আলীর মেয়ে মোছা. রুজিনা বেগমের পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। দুই বছর পর তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। কিছুদিন দেশের বাড়িতে সংসার করার পর পুনরায় দু’জনেই ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টসে চাকরি শুরু করেন।

রুজিনা গর্ভবতী হলে তারা ফের দেশের বাড়িতে চলে আসেন। তাদের ঘরে আসিফ নামে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। রুজিনা তার স্বামীর সঙ্গে পিত্রালয়ে বসবাস করতে থাকেন। স্বামী মোস্তফা জীবিকা নির্বাহের জন্য দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। রুজিনার পিতা নিতান্তই গরিব হওয়ার ফলে বসবাসের জায়গা না থাকায় একই গ্রামের জনৈক মৃত সোহরাব মেম্বারের ছেলে গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে একটি পরিত্যক্ত রান্নাঘরে সপরিবারে বসবাস করে আসছিলেন।

২০১১ সালের ২০ মে বিকেলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়। কলহের একপর্যায়ে মোস্তফা রুজিনার ওপর নির্মম শারীরিক নির্যাতন চালান। নির্যাতনে নিস্তেজ হয়ে পড়েন রুজিনা। এতেও আক্রোশ না কমলে মোস্তফা তার পাঁচ মাস বয়সী শিশু সন্তান মো. আসিফকে দুই পা ধরে ঘরে থাকা ঢেঁকির সঙ্গে পরপর তিনবার আছাড় দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় মোস্তফাকে আটকের পর পুলিশে সোপর্দ করেন আশপাশের লোকজন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে মামলা করেন।

পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে জামিন পেলে আত্মগোপনে চলে যান মোস্তফা। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন নাম পরিচয়ে (কুদ্দুস, রজব আলী, ইয়াসিন আলী ও সজিব ইত্যাদি) ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অটোচালক হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন। এরমধ্যেই চলমান মামলায় ২ ডিসেম্বর মোস্তফাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ  দেয় আদালত।

কোম্পানি কমান্ডার আশিক উজ্জামান জানান, মোস্তফাকে ঝিনাইগাতি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ধরণের অপরাধের বিরুদ্ধে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

 

গৌরীপুর নিউজ-শ্রাবণ/এইচএসএস 

    ইমেইলঃ news.gouripurnews@gmail.com