জামালপুর রেলস্টেশনে পুত্র সন্তান জন্ম দেন সীমা বেগম নামের এক মহিলা। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জামালপুর রেলস্টেশন প্ল্যাটফর্মে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় সন্তানের জন্ম দেন তিনি। নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে শাহ জামাল।
জানা যায়, প্রসূতি সীমা বেগম জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার উত্তর কালিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
জামালপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলজার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ট্রেন থেকে যাত্রীদের ফোনে একজন প্রসূতির জরুরি পরিস্থিতির কথা শোনা মাত্রই প্লাটফরমে শালীনতা বজায় থেকে সন্তান প্রসবের জন্য সব প্রস্তুতি নিয়ে ফেলি। নারী কনস্টবল ও অন্যান্য নারী যাত্রীদের দিয়ে প্রসূতি সীমা বেগমকে ট্রেনের কামরা থেকে প্লাটফরমে নামাই। আমি নিজে উপস্থিত থেকে এবং উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুস সাত্তার, প্লাটফরমে কর্মরত হেল্প ডেস্কের নারী কনস্টবল কল্পনা রানী, কনস্টেবল আল আমিন, আল ইমরান ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সিপাই শামীম ফরাজী সেখানে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রসূতি সীমা বেগমের পরিবারের স্বজনরা জানান, সীমা বেগম গাজিপুরের ভাওয়াল মীর্জাপুরে প্যাকেটজাত খাবার তৈরির কারখানার শ্রমিক। তার স্বামী মো. শাহজল পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। তাদের আরো দুই ছেলে রয়েছে। সন্তান প্রসবের সময় হওয়ায় স্ত্রীকে গ্রামের বাড়িতে রেখে যাওয়ার জন্য শুক্রবার সকালে গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলস্টেশন থেকে তারা দেওয়াগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনে ওঠেন। কিন্তু এরপরেই প্রসূতির ব্যাথা শুরু হলে ট্রেনটি জামালপুর রেলস্টেশনে পৌঁছার আগেই যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজন রেলওয়ে থানায় ফোন করে বিষয়টি জানান।
ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেলওয়ে থানার ওসি মো. গোলজার হোসেন ফায়ার সার্ভিসকে ফোন করেন। অন্যদিকে থানার নারী কনস্টবলদের প্রস্তুত থাকতে বলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রেনটি জামালপুর রেলস্টেশনে থামার সঙ্গে সঙ্গেই প্রসূতি সীমা বেগমের স্বাভাবিক প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ সময় অন্যান্য নারী যাত্রী তাদের সঙ্গে থাকা বাড়তি কাপড় দিয়ে ঐ প্রসূতিকে ঘির রাখেন। ভেতরে নারী কনস্টবল কল্পনা রানী প্রসূতিকে সার্বিক সহযোগিতা করেন এবং একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন।
প্রসূতির স্বামী মো. শাহজল বলেন, আজকে রেলওয়ে থানার ওসি স্যার, অন্যান্য পুলিশ ভাইবোন, ট্রেনের যাত্রী, ডাক্তারসহ সবাই আমার স্ত্রীর পাশে দাঁড়াইছে। তার কোন ক্ষতি হয় নাই। স্ত্রীকে নিয়ে আমি খুব বিপদে পড়ছিলাম। আল্লাহর রহমতে আমার স্ত্রী ও নবজাতক সন্তান সুস্থ আছে। সবাই যেভাবে সাহায্য করছে আমি এই ঋণ কোনদিনও শোধ করতে পারমু না।
জিএন/এইচ
ইমেইলঃ news.gouripurnews@gmail.com