ময়মনসিংহবুধবার , ১৬ আগস্ট ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়া দুইবার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
আগস্ট ১৬, ২০২৩ ১০:৩১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন ‘লুটে খেতে পারছে না, ক্ষমতা নাই, জনগণকে শোষণ করতে পারছে না। জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারছে না, তাই নির্বাচনে কারচুপির ধুয়া তুলছে। বিএনপির মুখে নির্বাচনে কারচুপির কথা আসে কোত্থেকে? ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়া দুই-দুইবার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। তার পরও তাদের মুখে আবার গণতন্ত্রের কথা।

তিনি আরও বলেন, বিদেশিদের উদ্দেশ্য গণতন্ত্র কিংবা নির্বাচন নয়, তারা উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আওয়ামী লীগের স্মরণসভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন নির্বাচন নিয়ে অনেকে উতলা হয়েছে। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন- ২০০১ সালে যখন আমাদের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে, তখন তো নির্বাচন নিয়ে তাদের এত মাথাব্যথা ছিল না। ৯৬ সালে খালেদা জিয়ার বিতর্কিত নির্বাচন নিয়ে তো তাদের এমন চেতনা দেখিনি। খালেদা জিয়ার ভুয়া ভোটার নিয়েও তো তাদের কোনো উদ্বেগ দেখিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ দেশের যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালাল, তাদের সঙ্গে বসতে হবে কেন? আমার মনে হয়, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা তাদের পছন্দ না। এদের উদ্দেশ্য নির্বাচন বা গণতন্ত্র না। এরা উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায়।

কয়েক বছর আগে করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজকে তারা গণতন্ত্রের কথা বলেন। আমি তাদের ওখানে (যুক্তরাষ্ট্র) দেখেছি, গভর্নমেন্ট অব দ্যা পিপল, বাই দ্যা পিপল, ফর দ্যা পিপল। তাদের বলেছি- আমি এমন দেশ থেকে এসেছি, যেখানে গভর্নমেন্ট অব দ্যা আর্মি, বাই দ্যা আর্মি, ফর দ্যা আর্মি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত মহাসাগর এবং বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে নানা রকম চক্রান্ত আছে। অনেকে এটিকে ব্যবহার করতে চায়। আর এখানে বসে আশপাশে আক্রমণ করবে। আমাদের কিছু আঁতেল আছে। তারা এসব চিন্তা করে কি না, জানি না। কিছু উপলব্ধি না করেই দুটো পয়সার পাওয়ার আশায় এদের সঙ্গে সুর মিলায়। এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আর আগেও গ্যাস বিক্রির কথা আসছিল, আমি বলেছিলাম- দেশের স্বার্থ বেঁচে ক্ষমতায় আসতে হবে, এত ক্ষমতালোভী আমি না। আমার বাবাও এমন ছিলেন না।’

নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশের একজন কুলাঙ্গার সুদখোর আছে। শ্রমিকের অর্থ মেরে খায়, ট্যাক্স দেয়নি। গরিব থেকে উচ্চ সুদে টাকা নিয়ে মেরে দিয়ে বিদেশে পাচার করে। এটাই তো কথা। উনি তাদের প্রিয় ব্যক্তি। আর আমরা কাজ করি, মানুষের কল্যাণে।’

১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড ও এর বিচারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ইতিহাস কখনো মুছে ফেলা যায় না, এটাই বাস্তবতা। ভেবেছিল কোনোদিন এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই এ দেশের মানুষকে। ২১ বছর পর তাদের সমর্থনে ক্ষমতায় এসে সেই বিচারের উদ্যোগ নিই। ৩৫ বছর সময় লেগেছে বিচার পেতে। কিছু খুনির রায় কার্যকর হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুনিদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছেন জিয়া। এরশাদ এসেও তাদের পুনর্বাসন করেছে। ব্যারিস্টার মঈনুল খুনিদের নিয়ে দলও গঠন করে। এটা খুনিদের মদদ দেওয়া।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খুনিরা বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করে ফেলে। ইসলামী প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেয়। বাংলাদেশ বেতারের নাম পরিবর্তন করে রেডিও বাংলাদেশ করে। জয় বাংলা স্লোগান বাদ দিয়ে জিন্দাবাদ স্লোগান নিয়ে আসে। ইতিহাসই বিকৃতি করে। বাংলাদেশের মানুষের উন্নতির সব স্বপ্ন বন্ধ হয়ে যায়। খুনি মোশতাক নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করল, জিয়াকে সেনাপ্রাধান বানাল।’

তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মীর জাফর যেমন তিন মাসের বেশি থাকতে পারেনি, তেমনি মুশতাকও থাকতে পারেনি। জিয়া ক্ষমতা দখল করে। উর্দি পরে ক্ষমতারোহণ এবং পরে নিজেকে রাজনীতিবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করারও চেষ্টা করে। আর্মি রুলস ভঙ্গ করে একটা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনও করে। ভোট কারচুপি ও ভোটচুরি তো সেখান থেকে শুরু। এরপর বিএনপি নামক সেই দল করে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়। স্বাধীন বাংলাদেশে সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা। সেদিন ঘাতকের বুলেটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হয়। ইতিহাসে এ ধরনের জঘন্য ঘটনা বাংলার মাটিতে ঘটে যায়। এটি সেই কারবালার ঘটনাকেও হার মানায়।’

স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে সূচনা বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল আওয়াল শামীমের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনিসহ অন্যরা।

 

জিএন/এইচ

প্রিয় পাঠক আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর,খবরের পিছনের খবর সরাসরি জানাতে যোগাযোগ করুন। আপনার তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

মোবাইলঃ +8801717-785548, +8801518-463033

ইমেইলঃ news.gouripurnews@gmail.com