দেড় বছরের শিশু জাহিদ। হাসপাতালে মৃত মায়ের বুকে আহাজারি করছিল জায়েদ, সেই ছবি নাড়িয়েছে সবার হৃদয়। পরিচয়হীন থাকার পর মেলে তার পরিচয়। বর্তমানে অনেকটা সুস্থ শিশু জাহিদ। ফিরেছে চঞ্চলতা। তবে অবুঝ জাহিদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে নিচ্ছে না তার মামা।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাহিদের মামা। আগামী রোববার শিশুকল্যাণ বোর্ডের সভা শেষে শিশু জাহিদকে নতুন ঠিকানায় পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সমাজসেবা কর্মকর্তা।
শিশু জাহিদের মামা রবিন মিয়া বলেন, আমি পেশায় পিকআপ চালক। নিজের তিন সন্তান নিয়েই কষ্টে দিন চলে। সেখানে জাহিদকে নিয়ে তার সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়া সম্ভব নয়। হয়তো গ্রামে থেকে রিকশাচালক হবে, ঠিকমতো খাবার পাবে না। আমি চাই আমার ভাগনের সুন্দর ভবিষ্যৎ। সে বড় হয়ে বিষয়টি বুঝতে পারবে। শিশুকল্যাণ বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নেবে, তাতেই জাহিদের ভালো হবে।
জেলা সমাজসেবা বিভাগের উপপরিচালক আ. কাইয়ুম বলেন, শিশুটির মামা চায় সুন্দর ভবিষ্যৎ। সে কারণে শিশুকল্যাণ বোর্ডের ওপর আস্থা রেখে একটি আবেদন দিচ্ছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আগামী রোববার সভা করে শিশুটিকে নতুন ঠিকানায় পাঠানো হবে। এরই মধ্যে শিশুটিকে নিতে আবেদন করেছেন কয়েকজন। শিশুটি এখনো ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে।
হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, শিশু জাহিদ এখন পুরোপুরি সুস্থ।
জানা যায়, গত ৯ মে মধ্যরাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকা উপজেলার স্কয়ার মাস্টার বাড়ি এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন জায়েদা আক্তার ও তার ছেলে জাহিদ। তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১০ মে রাতে মারা যান আহত নারী। নিহত জায়েদা সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজার উপজেলার কুসিউড়া গ্রামের রমিজ উদ্দিনের মেয়ে। ভালুকায় একটি জুতার কারখানায় কাজ করতেন তিনি। তবে শিশুটির বাবার পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বোনের মৃত্যুর খবর পেয়ে লাশ শনাক্ত করেন রবিন মিয়া। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন জায়েদা। তার মৃত্যুতে ১২ মে ভালুকা থানায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলা করে হাইওয়ে পুলিশ। গত ১৩ মে জাহিদকে তার মামার জিম্মায় দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ভালুকা থানার মামলাটি তদন্ত করে দায়ী গাড়ি এবং আসামিকে শনাক্ত ও গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়।
আগামী ২০ মের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন, সুরতহাল প্রতিবেদন ও অন্যান্য তথ্য আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। বিচারপতি এম আর হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদের চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
ভালুকা থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ কামাল আকন্দ বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে চাপা দেওয়া গাড়িটির নম্বর নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
জিএন/এইচ


ইমেইলঃ news.gouripurnews@gmail.com