নেত্রকোনার পূর্বধলায় সড়কে মায়ের রক্তাক্ত নিথর দেহের পাশে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকা শিশুটি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বারবার ঘুমের মধ্যে কেঁদে উঠছে শিশুটি। অজ্ঞাতপরিচয় শিশুটির দেখাশোনা করছেন বিশকাকুনি ইউপি সদস্য রুস্তম আলী ও কাছিয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা সুজাত মিয়া। তবে শনিবার পর্যন্ত ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত বা রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।
লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার পূর্বধলা থানায় মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলাটি করেন থানার উপপরিদর্শক তারিকুজ্জামান।
জানা গেছে, পূর্বধলা উপজেলার কাছিয়াকান্দা গ্রামের ইসহাক মিয়া গত বুধবার ভোরে ফজরের নামাজ পড়ে মাদ্রাসার পাশে তাঁর মায়ের কবর জিয়ারতে যান। এ সময় গ্রামীণ সড়কে প্রায় ৩০ বছর বয়সী এক নারীর মাথা থেঁতলানো রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান তিনি। লাশের পাশেই অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিল দুই বছর বয়সী এক শিশু। বিষয়টি গ্রামের লোকজনকে জানান তিনি। খবর পেয়ে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় আহত শিশুটিকে উদ্ধার করে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে শিশুটি। তার দেখাশোনা করছেন কাছিয়াকান্দা গ্রামের রুস্তম আলী ও সুজাত মিয়া।
রুস্তম আলী বলেন, ‘শিশুটিকে নিয়ে আমরা বিপদে আছি। এখনও তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। শিশুটির মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা ওই নারীকে হত্যার পর শিশুটিকেও মেরে ফেলার চেষ্টা করে। শিশুটি ঘুমের মধ্যে কেঁদে ফেলে, আবার ঘুমিয়ে যায়। এভাবে শিশুটিকে রেখে বাড়ি যেতেও মন চায় না।’
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক জাকিউল ইসলাম জানান, শিশুটির মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাথায় সিটিস্ক্যান করানো হয়েছে। তবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঘটনা ঘটেনি। সে জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন নেই। শিশুটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসা-পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে সমাজসেবা অধিদপ্তর।
পূর্বধলা থানার ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম জানান, জীবিত শিশু ও অজ্ঞাতপরিচয় নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
জিএন/এইচ
ইমেইলঃ news.gouripurnews@gmail.com