কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ৭ দিনের নবজাতক সন্তানকে নয়তলা বাসার ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করেছেন পাষণ্ড মা তৃষা আক্তার (২৪)। এ ঘটনায় পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন ওই নারী।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকালে শহরের কমলপুর নিউ টাউন ফুল মিয়া সিটি এলাকায় একটি নয়তলা ভবনের পাশের একটি ঝোপ থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ভৈরব থানা পুলিশ।
নবজাতক শিশুটির নাম তাসনিদ উসমান। তার বাবা ডা. উসমান গণি। তিনি স্থানীয় একটি হাসপাতালের মালিক ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাতে নবজাতক শিশুকে খাবার খাইয়ে রাত ২টার দিকে ঘুমিয়ে পড়েন মা তৃষা আক্তার। তার স্বামী ডা. উসমান গণি ঘুমিয়ে ছিলেন আরেক রুমে। ঘরে শিলা ও মিম নামের গৃহপরিচারিকা এবং শিশুটির মা তৃষার বান্ধবী সুমাইয়া ছিলেন। রাত পৌনে ৪টার দিকে শিশুটির মা তৃষার চিৎকারে প্রতিবেশীসহ বাসার সবাই জেগে ওঠেন। এ সময় তিনি জানান, তার বাচ্চাটি পাওয়া যাচ্ছে না। পরে সবাই খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
পরে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জানতে পারেন, শিশুটি বাড়ির পাশে একটি ঝোপে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই গৃহপরিচারিকা, নবজাতকের মা ও তার বান্ধবীকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মা তৃষা আক্তারকে আটক করে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নবজাতকের মা তৃষা নিজেই তার নবজাতক শিশুটিকে ভবন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছেন বলেন পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।
স্বজনরা জানান, ডা. উসমান গণির দ্বিতীয় স্ত্রী তৃষা আক্তার। তিনি কুলিয়ারচর উপজেলা নোয়াগাঁও এলাকার এনায়েত উল্লাহর মেয়ে। তাদের পরিবারে দেড় বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। সাতদিন আগে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে নবজাতক শিশুটির জন্ম হয়।
ভৈরব থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, নবজাতক শিশুটির মা তৃষা আক্তার নয়তলার বেলকনির জানালা দিয়ে শিশুটিকে ছুড়ে ফেলে হত্যা করেন বলে আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় তার স্বামী অর্থাৎ শিশুটির বাবা চিকিৎসক উসমান গণি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় নিহত শিশুটির মা তৃষা আক্তারকে আটক করা হয়েছে। শিশুটির লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তবে কী কারণে নবজাতকের মা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি জানান, ফরেনসিক রিপোর্ট, ইনভেস্টিগেশন, সিডিআর কল লিস্ট পাওয়ার আগ পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কারণ বলা যাবে না। আমরা তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করি তারপর এর সঠিক কারণটা বলা যাবে।
জিএন/এইচ
ইমেইলঃ news.gouripurnews@gmail.com