ঢাকারবিবার , ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হাসপাতালের বিছানায় শুয়েও চোখ-মুখে চিন্তার ভাঁজ গুলিবিদ্ধ নবী হোসেনের

অনলাইন ডেস্ক
সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪ ১১:৩৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নেত্রকোণার বারহাট্রা উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের দেওপুর গ্রামের নসর জামানের সাত ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে পঞ্চম নবী হোসেন (২৩)। নসর জামান এক সময় কৃষি কাজ করে কোনো রকমে স্ত্রী সন্তানদের ভরণপোষণ করলেও এখন তিনি বয়সের ভারে তাও পারেন না। একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়েছে।

ছেলেদের কেউ মাওলানা, কেউ মাদরাসা শিক্ষার্থী, কেউবা বেকার। অবিবাহিত নবী হোসেন ঢাকার গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে চাকরি করে যা বেতন পেতেন নিজের খরচ বাদে বাকি টাকা বাবা-মায়ের জন্য খরচ করতেন। কিন্তু এখন সংসারের হাল ধরার মতো কেউ নেই।

নবী হোসেন আহত হওয়ার পর থেকে চিকিৎসা বাবদ ঋণ হয়েছে লক্ষাধিক টাকা। এগুলো পরিশোধ করার সক্ষমতা না থাকায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের বিছানায় শুয়েও চোখ-মুখে চিন্তার ভাজ পড়েছে নবী হোসেনের।

কথা হয় নবী হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস এলাকায় আন্দোলনে যোগ দেন তিনি। ওইদিন বিকেলে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশের ছোড়া চার শতাধিক ছররা গুলিতে নবী হোসেনের পিঠ, পেটসহ হাত বিদ্ধ হয়। অজ্ঞান অবস্থায় কে বা কারা তাকে গাজীপুরের শহিদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেখে আসে। সেখানে জ্ঞান ফিরলে বাড়ির মুখস্থ নম্বরে কল দেন নবী। পরে বড় ভাই জামাল মিয়া ওই হাসপাতালে ছুটে গেলে চিকিৎসক নবীকে হাসপাতালে রাখতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এমতাবস্থায় অনেক কষ্টে ১০ হাজার টাকায় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে নবীকে ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত লেক ভিউ প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুই দিনে এক লাখ টাকা খরচ হয়।

তিনি বলেন, খরচ হওয়া লক্ষাধিক টাকা বাড়ি থেকে ধারদেনা করে আনা হয়েছে। এসব টাকা পরিশোধ করা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি। এখন পর্যন্ত কারো কাছ থেকে সহায়তা পাইনি।

নবী হোসেন বলেন, ছররা গুলিতে শরীরে যে কি যন্ত্রণা হয়- তা বলে বুঝানো সম্ভব না। একেকটা দিন যাচ্ছে অসহ্য যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. জাকিউল ইসলাম বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহত অবস্থায় হাসপাতালে মোট ১৯৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। রোগীরা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। এখন পর্যন্ত ১৭ জন রোগী ভর্তি আছে। সব রোগীদেরই যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। নবী হোসেনও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন।

 

জিএন/এইচ

    ইমেইলঃ news.gouripurnews@gmail.com